সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায় নিয়ে আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশন (OHCHR)। সংস্থাটির মুখপাত্র রাভিনা সামদাসানি জেনেভা থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলেছেন—গত বছরের বিক্ষোভ দমনের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে এই রায় “একটি তাৎপর্যপূর্ণ ধাপ”, যা মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ীদের কাছে স্পষ্ট বার্তা পৌঁছে দেয়।
বিবৃতিতে জাতিসংঘ আবারও জানায়, মৃত্যুদণ্ডকে তারা কোনো পরিস্থিতিতেই সমর্থন করে না। রাভিনা সামদাসানি বলেন, “মৃত্যুদণ্ডের প্রয়োগ আমাদের জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।”
তিনি মনে করিয়ে দেন, ফেব্রুয়ারি ২০২৫-এ প্রকাশিত জাতিসংঘের তদন্ত রিপোর্টে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছিল, নেতৃত্বের অবস্থানে থাকা ব্যক্তিসহ সব অপরাধীকে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মানদণ্ড অনুযায়ী ন্যায়বিচারের আওতায় আনতে হবে।
সামদাসানি আরও বলেন, প্রক্রিয়াটিতে ভুক্তভোগীদের প্রতিকার, ক্ষতিপূরণ ও ন্যায়বিচারের অধিকার নিশ্চিত করাও অপরিহার্য।
মুখপাত্র জানান, জাতিসংঘ এই নির্দিষ্ট মামলার বিচারপ্রক্রিয়ায় সরাসরি অংশ নেয়নি, তবে আন্তর্জাতিক অপরাধ সংক্রান্ত সব মামলায় ন্যায়সঙ্গত, স্বচ্ছ এবং মানবাধিকারসম্মত আইনি প্রক্রিয়া বজায় রাখতে প্রতিষ্ঠানটি নিয়মিত আহ্বান জানিয়ে আসছে।
হাইকমিশনার ফলকার টুর্ক আলাদা এক মন্তব্যে বলেন—বাংলাদেশ যদি সত্য প্রকাশ, ক্ষতিপূরণ এবং ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে এগোয়, তাহলে জাতীয় পুনর্মিলনের পথ আরও মজবুত হবে। তিনি নিরাপত্তা খাতের সংস্কারকে “অত্যন্ত জরুরি” বলে উল্লেখ করেন, যাতে অতীতের নির্যাতন, দমন ও ক্ষমতার অপব্যবহার পুনরাবৃত্তির সুযোগ না থাকে।
টুর্ক আরও জানান, শান্তি ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার প্রয়াসে বাংলাদেশের জনগণ ও সরকারকে সহায়তা দিতে জাতিসংঘ প্রস্তুত।