মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে ঘোষিত সাজা কার্যকরের প্রক্রিয়া নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম। তিনি জানিয়েছেন, ট্রাইব্যুনালের রায়ের পর ৩০ দিনের মধ্যে আপিল না করলে, আসামিদের গ্রেপ্তার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দণ্ড কার্যকর হতে পারে—এমনটাই আইনে বলা রয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
ট্রাইব্যুনালের প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে প্রসিকিউটর তামীম বলেন—
-
ট্রাইব্যুনাল আইনের ২১(৩) ধারায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে, রায় ঘোষণার তারিখ থেকে ৩০ দিনের ভেতরে আপিল দাখিল করতে হবে।
-
এই সময়সীমা পার হয়ে গেলে বিলম্ব মওকুফের সুযোগ নেই, কারণ বিশেষ আইনের বিধান সাধারণ ফৌজদারি আইনের মতো নয়।
-
আপিল দাখিল করা হলে ৬০ দিনের মধ্যে তা নিষ্পত্তির বাধ্যবাধকতা আছে।
তিনি আরও জানান, দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা এখন কেবল মামলার নথির সার্টিফায়েড অনুলিপি চাইতে পারবেন এবং নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপিল বিভাগে আবেদন করতে পারবেন।
রায় ঘোষণার পর তা স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা থাকলেও ট্রাইব্যুনাল-১-এর চেয়ারম্যান অসুস্থ থাকায় এখনও অনুলিপি পাঠানো সম্ভব হয়নি। অনুলিপি হাতে পাওয়ার পরই
-
ইন্টারপোলের মাধ্যমে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
-
এবং ভারতে পলাতক দুই আসামিকে হস্তান্তরের আবেদন
প্রক্রিয়া শুরু করবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়—এমনটিই সরকারি সূত্রের ভাষ্য।
ভারতের একাধিক উচ্চপর্যায় কর্মকর্তা বিভিন্ন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন—
-
রায় ঘোষণার পরও দিল্লির নীতিগত অবস্থানে পরিবর্তনের কোনো ইঙ্গিত নেই।
-
শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে তারা কোনো পদক্ষেপ নিতে আগ্রহী নন।
ভারতের সাবেক হাইকমিশনার পিনাক রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, দিল্লি শেখ হাসিনাকে “মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিতে পারে না”; এবং মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ভারত তার অবস্থান বদলাবে না। তার মতে, বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে অস্থিরতা অব্যাহত থাকবে।
ভারতীয় বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন,
-
দিল্লি এই মামলাকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রতিফলন হিসেবে দেখে।
-
একই সঙ্গে ভারতের নীতি-নির্ধারকরা মনে করছেন, বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে শেখ হাসিনা সম্পর্কে বিরূপ মনোভাব তৈরি হয়েছে, যা ভারত উপেক্ষা করছে না।

