বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ঘোষিত মৃত্যুদণ্ড নিয়ে ভারতের অভ্যন্তরেই প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। দেশটির প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের জ্যেষ্ঠ নেতা শশী থারুর বলেছেন, এ ধরনের রায় তাকে “গভীরভাবে উদ্বিগ্ন” করেছে। তিনি জানান, যেকোনো স্থানে মৃত্যুদণ্ডের বিরোধী হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত তাকে আতঙ্কিত করেছে।
ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, গত সোমবার ঢাকার একটি বিশেষ ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অনুপস্থিত অবস্থায় শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। গত বছরের আগস্টে ছাত্র ও জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর ক্ষমতাচ্যুত হয়ে তিনি ভারতে গিয়ে আশ্রয় নেন।
শশী থারুর সাংবাদিকদের বলেন, “মৃত্যুদণ্ড আমি কোনো অবস্থাতেই সমর্থন করি না—দেশের ভেতরে হোক বা বাইরে। ফলে এই রায় স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগের।”
ট্রাইব্যুনালের রায়
চব্বিশের জুলাই সংঘটিত হত্যাকাণ্ড-সংক্রান্ত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ট্রাইব্যুনাল
-
শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে
-
মৃত্যুদণ্ড, এবং
-
আমৃত্যু কারাদণ্ড—দুটি সাজাই প্রদান করে।
-
একই মামলায় রাজসাক্ষী হওয়া সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি হাসিনা ও কামালের দেশে থাকা সব সম্পদ বাজেয়াপ্তের নির্দেশ আসে, যা জুলাইয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে বিতরণ করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
ভারতের জন্য জটিল পরিস্থিতি
বিবিসি তাদের প্রতিবেদনে বলেছে, এই রায় ভারতের জন্য বড় ধরনের কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে।
-
বাংলাদেশ ইতোমধ্যে নতুন করে প্রত্যর্পণ অনুরোধ পাঠিয়েছে।
-
যদিও দুই দেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি রয়েছে, ভারত এর আগে বাংলাদেশের দুটি অনুরোধেই কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
বিবিসির মতে, হাসিনা ক্ষমতায় থাকাকালে বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ ছিল, এবং ভারতের বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল তাকে ফিরিয়ে না দেওয়ার পক্ষে। ফলে ভারত এখন এক ধরনের কূটনৈতিক অস্বস্তিতে পড়েছে।
-
যদি তারা হাসিনাকে ফেরত না দেয়, বাংলাদেশ বিষয়টি অবজ্ঞা হিসেবে দেখতে পারে।
-
আর ফিরিয়ে দিলে তা ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক ও নৈতিক অবস্থানের ওপর চাপ তৈরি করতে পারে।

