তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং টোবগে। শনিবার সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ড্রুক এয়ারের একটি বিশেষ ফ্লাইটে তিনি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাকে অভ্যর্থনা জানান।
বিমানবন্দরের ভিআইপি লাউঞ্জে দু’নেতার মধ্যে সংক্ষিপ্ত আলাপ হয়। এ সময় প্রধানমন্ত্রী টোবগে বাংলাদেশে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে খোঁজ নেন এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আগমনের পর ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ১৯ বার তোপধ্বনি এবং গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। এরপর তিনি সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং দর্শনার্থী খাতায় স্বাক্ষর করেন।
দিনের দ্বিতীয়ভাগে টোবগের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ও বাণিজ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে। বিকেল ৩টার দিকে তিনি তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ড. ইউনূসের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করবেন। সন্ধ্যায় তার সম্মানে আয়োজিত রাষ্ট্রীয় ভোজসভায়ও যোগ দেবেন।
ভুটানের প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আলম সিয়াম জানান— সফরকালে তিনটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। এগুলো আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ সরবরাহ, ভুটানে বাংলাদেশি চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ এবং কৃষি সহযোগিতা সংক্রান্ত।
তিনি আরও জানান, বাংলাদেশ-ভুটান ঐতিহ্যগতভাবে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে চলছে। ২০২০ সালের অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি উভয় দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে নতুন গতি দেয়। এবারের সফরে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি, কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, টেলিযোগাযোগ, পর্যটন, সংস্কৃতি ও ক্রীড়াসহ বিস্তৃত খাতে সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হবে।
বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ভুটানের কাছে কর্মসংস্থান, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, পানি ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্য-শিক্ষায় নতুন উদ্যোগসহ বিভিন্ন সহযোগিতা প্রস্তাব পেশ করতে পারে বলেও জানানো হয়।
আগামীকাল রোববার প্রধানমন্ত্রী টোবগে বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন। এছাড়া সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টা ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করার সম্ভাবনাও রয়েছে।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) সকালে তিনি থিম্পুর উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। বিদায় জানাবেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা।